
।। বার্তাকক্ষ প্রতিবেদন ।।
এবার যাত্রীসেবা বাড়ানো ও ভোগান্তি কমাতে ঈদুল ফিতর সামনে রেখে বাংলাদেশ রেলওয়ে ট্রেনের মোট টিকেটের ৫০ শতাংশ ই-টিকিটিংয়ের জন্য রাখলেও রেলের ওয়েবসাইট ও নতুন তৈরি মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে টিকিট কাটতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে মানুষ।
ঈদের আগাম টিকিট বিক্রির চতুর্থ দিন রোববার (২৬ মে) অনলাইনে ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট কিনতে না পারার অভিযোগ করছেন অনেকে। বাধ্য হয়ে তাদেরকে ছুটতে হয়েছে কমলাপুর স্টেশনসহ বিভিন্ন গন্তব্যের জন্য নির্দিষ্ট কাউন্টারে। ফলে দ্বিগুণ ভোগান্তির শিকার হয়েছেন টিকিট প্রত্যাশীরা।
রোববার সকালে কমলাপুর স্টেশনে কথা হয় সরকারি তিতুমীর কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে। রাজশাহী যাওয়ার সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট মোবাইল অ্যাপে কিনতে ব্যর্থ হয়ে কমলাপুর এসেছেন। তিনি বলেন, অনেক চেষ্টা করেও মোবাইল অ্যাপে ঢুকতেই পারেননি তিনি।
একই অভিযোগ করলেন মুগদার বাসিন্দা সোহেল মাহবুব। খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনের কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা সোহেল মাহবুব বলেন, অগ্রিম টিকিট বিক্রির প্রথম দুই দিন তিনি মোবাইলের অ্যাপে টিকিট কেনার চেষ্টা করে বিফল হয়েছেন।
রেলওয়ের অনলাইন টিকিট সেবা দিচ্ছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সিএনএসবিডি। রোববার দেওয়া হচ্ছে ৪ জুনের টিকিট। ঢাকার স্টেশন থেকে অনলাইনে বরাদ্দ আছে ১০ হাজার ৫৬১টি টিকিট। এর মধ্যে দুপুর একটার ২০ মিনিট পর্যন্ত ছয় হাজার ৫৭৩টি টিকিট বিক্রি হয়েছে বলে তথ্য দিয়েছে সিএনএসবিডি।
তবে কমলাপুর স্টেশনের মনিটরে প্রদর্শিত সিএনএসবিডির এ তথ্য নিয়ে সংশয় প্রকাশ করলেন রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট কিনতে আসা নাবিল আহমেদ।
এ বিষয়ে সিএনএসবিডির সিস্টেম এনালিস্ট ফারহান ইশতিয়াক টেলিফোনে বলেন, প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছাড়া আর কারো বক্তব্য দেয়ার অনুমতি নেই। তিনি এই মুহূর্তে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন।
ঈদের পর ই-টিকিটিংয়ের অব্যস্থাপনার অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, তারা (সিএনএসবিডি) আমাদের বলছে একসঙ্গে প্রায় চার লাখ লোক অনলাইনে টিকিট কিনতে চায়। একারণে সবাইকে টিকিট দেয়া সম্ভব হয়নি। ঈদের পর আমরা বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা করে দেখব। তাদের যুক্তি সঠিক প্রমাণ না হলে আমরা অন্য চিন্তা করব।
অনলাইনে টিকিট না পেলেও কাউন্টার থেকে টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। শনিবার কমলাপুর স্টেশনের কাউন্টারে টিকিট বিক্রির নির্ধারিত সময় ৪টার পরও টিকিট নিতে দেখা গেছে। একই চিত্র দেখা গেছে টিকিট বিক্রির শেষ দিন রোববারও।
রেল কর্মকর্তারা জানান, অন্যান্য বছরের মতো এবার টিকিটের জন্য কারও ‘ডিও’ না নেওয়ায় কোনো টিকিট ‘ব্লক’ করে রাখার প্রয়োজন পড়ছে না। এ কারণে কাউন্টার থেকে টিকিট পাচ্ছেন টিকিট প্রত্যাশীরা। যাত্রীরা মনে করছেন, টিকিট বিক্রির প্রথম দিন দুদকের কর্মকর্তারা কমলাপুর স্টেশনে হানা দেওযায় চিত্র পাল্টে গেছে।
এবার নিয়মের বাইরে কাউকে টিকিট দেয়া হচ্ছে না জানিয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, মন্ত্রী-এমপিরা পদমর্যাদা অনুযায়ী টিকিট পাবেন। কিন্তু তাদের পরিচয়ে তাদের আত্মীয় স্বজন, কর্মচারীরা এসে টিকিট নিয়ে গেলে তো ইকুইটি থাকল না। এজন্য মন্ত্রী এমপিরা তাদের পরিবার নিয়ে ট্রেন যাত্রা করতে চাইলে আমরা ব্যবস্থা করব। তাদের জন্য আলাদা কোচ থাকবে।